
আচ্ছা আমি লিখি কেন ? এই যে নিয়মিত ঘরের কোনে বসে ঘাড় গুঁজে শব্দের তল্পি বওয়া ? এই যে দিস্তে দিস্তে পাতা ভরানো ? জীবনে তো সময় কাটানোর অনেক উপায় আছে । অনেক কিছু করার আছে ? দেন হোয়াই দিস নো ওয়ার্ক সো ফ্রাই পাফড রাইস টাইপ অ্যাকটিভিটি ? দিস ইউজলেস ম্যানুফাকচার অফ শব্দফোড়ন অ্যান্ড বাক্যচচ্চড়ি ?
হোয়াই ?
বলছি । তার আগে অন্য একজন যা লিখে গেছেন সেটা একবার পড়ুন -
আইফেল টাওয়ারের কাছে বাসারি শন দ্যু মায়াসে কর্মরত আমার পরিচারক বন্ধু লঅঁ, এক রাতে Une Grande Beer (একটা বড় বিয়ার) পরিবেশন করার সময় আমাকে তার জীবনের ব্যাখা শুনিয়েছিল ।
"আমি দশ থেকে বারো ঘন্টা কাজ করি," বলে সে, "তারপরে মাঝরাতে আমি গিয়ে নাচি, নাচি, নাচি, সকাল চারটে বা পাঁচটা অবধি, তারপর শুতে যাই আর ঘুমোই দশটা অবধি, তারপর ওঠ, ওঠ আর এগারোটার মধ্যে কাজে তারপর আবার দশ বা বারো কিম্বা পনেরো ঘন্টার কাজ ।"
"কি করে পারো করতে ?" প্রশ্ন করি আমি ।
"খুব সহজ," বলে সে । "ঘুমিয়ে পড়া মানে মরে যাওয়া । মরে যাওয়ার মতো । তাই আমরা নাচি, আমরা নাচি যাতে মরে যেতে না হয় । ওইটা আমরা চাই না ।"
"তোমার বয়স কতো ?" প্রশ্ন করি আমি, অবশেষে ।
"তেইশ," বলে সে ।
"আহ্ " বলে তার কনুইটা আলতো করে ধরি। "আহ্ । তেইশ, তাই না ?"
"তেইশ, " বলে সে, হাল্কা হেসে । "আর আপনি ?"
"ছিয়াত্তর," বলি আমি । "আর আমিও মরে যেতে চাই না । কিন্তু আমি তেইশ বছরের নয় । এর উত্তর কি করে দিই? কি করি আমি ?"
"হ্যাঁ," বলে লঅঁ, হাসিটা তখনো লেগে তার মুখে, নিষ্পাপ ,"রাত তিনটের সময় আপনি কি করেন ? "
"লিখি ।" আমি বলি , অবশেষে
"লেখেন !" বলে লঅঁ, আশ্চর্যচকিত হয়ে । "লেখেন ? "
"যাতে মরে না যাই," বলি আমি, "তোমার মতো ।"
"আমার মতো ?"
"হ্যাঁ ।" বলি আমি, নিজেই হাসছি আমি তখন। "রাত তিনটের সময়, আমি লিখি, আমি লিখি, আমি লিখি !"
"আপনি খুব লাকি," বলে লঅঁ , "আপনি খুব ইয়ং ।"
"আপাততঃ" বলি আমি, তারপর বিয়ার শেষে চলে যাই আমার টাইপরাইটারের কাছে - একটা গল্প শেষ করতে ।
এটা রে ব্রাডবেরির দ্য ইলাস্ট্রেটেড ম্যান বইতে তাঁর লেখা ভূমিকার কিছু অংশ ।
আমি কেন লিখি ?
ওই যা ব্রাডবেরি বলেছেন - বেঁচে থাকতে ।
লিখতে থাকা মানে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে থাকা । লিখতে থাকা মানে বাঁচতে থাকা ।